নিজস্ব প্রতিবেদক ● ১৫ জুন ২০২৫
সৌদি প্রবাসী মো. সুজন ইসলামের জীবনে স্বপ্নের মতো এক সন্ধ্যা হঠাৎই পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। ফেসবুকে এক অপরিচিত ব্যক্তির বন্ধুত্বের প্রস্তাব, খোশ আলাপে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা সম্পর্ক, এরপর একদিন আচমকা পাওয়া এক ‘লটারির খবর’—সব মিলিয়ে এক দুর্বিষহ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হন তিনি।
প্রতারকের দাবি ছিল, আন্তর্জাতিক লটারিতে সুজনের ৮৪ লাখ টাকা পুরস্কার লেগেছে। আর এই অর্থ তুলতে হলে আগে দিতে হবে ‘সরকারি ভ্যাট’ বাবদ ১০ লাখ টাকা। স্বপ্নে বিভোর সুজন নিজের শ্বশুরের সহায়তায় ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে কিস্তিতে বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন মোট ৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা।
এরপরই শুরু হয় ছলনার আরেক রূপ—ফোন বন্ধ, মেসেজে সাড়া নেই, ফেসবুকেও কোনো জবাব মেলে না। সুজন বুঝতে পারেন, তিনি ফাঁদে পা দিয়েছেন।
ঘটনার তদন্তে নামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। প্রযুক্তির সহায়তায় একাধিক তথ্য বিশ্লেষণ করে অবশেষে গতকাল ১৪ জুন সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার পানিয়ার পুকুর এলাকা থেকে প্রতারক রনি ইসলাম (২২) কে গ্রেফতার করে।
রনির কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ফেসবুক ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে প্রতারণার কৌশল ও সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। জানা গেছে, সে-ই পুরো চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী।
রনি ইসলাম, মহুবার রহমানের ছেলে, বর্তমানে ডিবি হেফাজতে রয়েছে এবং আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রবাসী সুজনের মতো অনেকেই আজকাল এমন চটকদার লটারির প্রলোভনে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আহ্বান—কোনো আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করুন, সন্দেহ হলে দ্রুত পুলিশের সহায়তা নিন।