গুম তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক:- ঢাকা, ৪ জুন ২০২৫: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আজ বুধবার দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন (ইন্টেরিম) প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বেলা ১১টায় কমিশনের প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে সদস্য নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন ও নাবিলা ইদ্রিস উপস্থিত থেকে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন।

প্রতিবেদন গ্রহণকালে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াও উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদন হস্তান্তরের পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশ করতে হবে। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বৈশ্বিক আগ্রহের বিষয়।

”তিনি বলেন, “ঘটনাগুলো গা শিউরে ওঠার মতো। সমাজের ‘ভদ্রলোকরা’, আমাদের আত্মীয়স্বজনরাই এই ভয়াবহতা ঘটিয়েছেন। এমন নির্মমতার চিত্র তুলে ধরতে একটি ‘হরর মিউজিয়াম’ হওয়া উচিত।

”প্রধান উপদেষ্টা কমিশনকে সুপারিশ করেন, প্রতিবেদনে করণীয় বিষয়গুলো কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ে তা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করে দিতে, যাতে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে।

কমিশনের এক সদস্য জানান, “অনেক কর্মকর্তা অনুশোচনায় ভোগেন। দু’জন লিখিতভাবে আত্মশুদ্ধির চিঠি দিয়েছেন, যা গণভবনে পাওয়া গেছে এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে তা স্বীকারও করেছেন।

”কমিশনের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ১,৮৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার মধ্যে ১,৩৫০টি যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।তারা জানান, এখনো ৩০০-র বেশি গুম হওয়া ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।

কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যেন অন্তত ব্যাংক লেনদেনে সক্ষম হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করে সাত বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছরে মৃত্যুর presumptive ঘোষণা কার্যকর করার।

প্রধান উপদেষ্টা কমিশনকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলেন, যাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

তিনি কমিশন সদস্যদের সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেন, “আপনারা ভয়-ভীতি ও হুমকি উপেক্ষা করে যেভাবে কাজ করছেন, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার রক্ষাকারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *