১০০ কেজি গাঁজা ও ৫২ বোতল অবৈধ ভারতীয় মদসহ ২ মাদককারবারী গ্রেফতার

শেখ নাহিদ-

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। মাদক উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি তরুণ সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষায় ঢাকা মহানগরে ডিএনসি’র ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) সক্রিয়ভাবে অভিযান পরিচালনা করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ মে ২০২৫ সকালে মহাখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিএনসি। উপপরিচালক শামীম আহম্মেদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান এবং পরিদর্শক বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত একটি চৌকস টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ২.৫ মন (১০০ কেজি) গাঁজা ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৫২ বোতল ভারতীয় চোরাই মদসহ দুই জন মাদককারবারীকে গ্রেফতার করা হয়।

জব্দকৃত আলামত:

১. পাঁচটি বড় ট্রাভেল ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো ও কসটেপে বাধা মোট ১০০ কেজি গাঁজা (প্রতিটি ব্যাগে ২০ কেজি করে)।
২. একটি সিনথেটিক বস্তায় ২৩টি প্লাস্টিক বোতলে ভারতীয় Old Monk Deluxe Rum (৭৫০ মি.লি. করে মোট ১৭.২৫ লিটার)।
৩. আরেকটি সিনথেটিক বস্তায় ২৯টি প্লাস্টিক বোতলে বিভিন্ন ভারতীয় ব্র্যান্ডের চোরাই মদ, যার মধ্যে রয়েছে:

  • McDowell’s No.1 Luxury Blended Whisky – ১১ বোতল

  • AC Black Pure Grain Deluxe Whisky

  • Iconiq White Finest International Grain Whisky

  • Royal Green Deluxe Blended Whisky

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন:

১. সৌরভ ঘোষ (২৩) — পিতা: কার্তিক ঘোষ, মাতা: জবা রাণী ঘোষ, ঠিকানা: হালিতলা, থানা: নবীগঞ্জ, জেলা: হবিগঞ্জ।
২. মো. শাহিন (৩০) — পিতা: রজব আলী, মাতা: আছিয়া বেগম, ঠিকানা: নারায়নতলা, থানা: সুনামগঞ্জ সদর, জেলা: সুনামগঞ্জ।

অভিযানের বিবরণ:

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে একটি চক্র অবৈধ বিদেশি মদ ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় সরবরাহের জন্য তৎপরতা চালাচ্ছিল। একটি গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়। তথ্য বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, চক্রটি মহাখালী এলাকায় মাদকের একটি বড় চালান সরবরাহ করতে যাচ্ছে।

এনিয়ে গাজীপুরের পূবাইল এলাকা থেকে এনা পরিবহনের একটি বাস অনুসরণ করা হয়। বাসটি মহাখালীতে পৌঁছালে তা থামিয়ে সন্দেহভাজন দুইজনকে চিহ্নিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তারা মাদকের চালানের সত্যতা স্বীকার করে এবং তাদের দেখানো মতে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সুনামগঞ্জ সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে সেখানেই প্রাথমিকভাবে মজুদ করত এবং পরে বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় ডিলারদের কাছে উচ্চ মূল্যে সরবরাহ করত। তারা পূর্বেও একাধিকবার মাদকের চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলেও স্বীকার করে।

চোরাচালান রোধে বিশেষ ব্যবস্থা:

ঈদকে সামনে রেখে মাদকের সরবরাহ প্রতিরোধে ইতোমধ্যে চারটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী বনানী থানায় পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) কর্তৃক ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *