বেনাপোলে দুদকের অভিযানে ধোঁয়াশা, সাংবাদিকদের দুয়ো ধ্বনি

মাহমুদুল হাসান

বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোরের সমন্বিত কার্যালয়ের তদন্ত দলের অভিযানে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে অভিযানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করায় দুদকের গাড়ি অবরোধ করে বিক্ষোভ জানান তারা। এসময় “ঘুষখোর”, “দুদক ভুয়া”, “রফাদফা”—এমন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে কাস্টমস হাউস এলাকা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কাস্টমস হাউসের সামনে থেকে রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমা আক্তারের ঘুষের টাকা বহনকারী হিসেবে হাসিবুল (৩৫) নামের এক যুবককে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ আটক করে দুদক। পরে তাকে নিয়ে শামিমার কক্ষে প্রবেশ করে দীর্ঘ চার ঘণ্টা ৩০ মিনিট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর হাসিবুলকে গ্রেফতার দেখিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হলেও রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমাকে ছেড়ে দেন তদন্ত দল।

অভিযান চলাকালীন সাংবাদিকদের কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বারবার প্রেসব্রিফিংয়ের অনুরোধ করলেও দুদক কর্মকর্তারা কালক্ষেপণ করেন। অভিযান শেষে ফিরে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা দুদকের গাড়ি অবরোধ করে শামিমাকে গ্রেফতার না করার কারণ জানতে চান। সন্তোষজনক জবাব না মেলায় সাংবাদিকদের ক্ষোভ আরও বাড়ে।

প্রতিদিনের কথা পত্রিকার বেনাপোল প্রতিনিধি আনিসুর রহমান লাইভে অভিযোগ করেন, ১ কোটি টাকার লেনদেনে দুদক কর্মকর্তারা রাজস্ব কর্মকর্তাকে রক্ষা করে সহযোগী হাসিবুলকে বলির পাঁঠা বানিয়েছেন।

তবে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী দুদক যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক সালাউদ্দিন বলেন,
“যেহেতু জব্দকৃত টাকা হাসিবুলের কাছ থেকে পাওয়া গেছে, তাই তাকেই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমা স্বীকার করেছেন টাকা তার জন্যই বহন করা হচ্ছিলো। তাদের উভয়ের মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

সাংবাদিকদের অভিযোগ বিষয়ে সালাউদ্দিনের কাছে ফোনে বারবার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ঘটনার পর বেনাপোল জুড়ে দুদকের এ অভিযান ‘টক অব দ্য টাউন’-এ পরিণত হয়েছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—তদন্তে অনিয়মের আড়ালে কি দুদক কর্মকর্তারাই দুর্নীতিগ্রস্ত?

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *