কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, কুড়িগ্রামে চিকিৎসকের অবহেলায় এক শ্বাসকষ্ট রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত এমবিবিএস চিকিৎসক না থেকে, মাত্র ৫০০ টাকায় ভাড়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত এক ডিএমএফ পাস ছাত্রকে দায়িত্বে রেখে চিকিৎসক নিজে হাসপাতালে অনুপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম জামাল বাদশা (৫৫)। তিনি সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে জামাল বাদশাকে দ্রুত কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেখানে দীর্ঘ এক ঘণ্টা পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক না থাকায় রোগী বারান্দায় পড়ে থাকেন। অবশেষে ডিএমএফ পাস করা রুবেল নামের এক যুবক রোগীকে দায়সারা ভাবে দেখেন, ততক্ষণে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
রোগীর ভাগনে একরামুল হাসান বলেন,
> “আমার ফুপাতো চাচা এক ঘণ্টা ধরে জরুরি বিভাগে অপেক্ষা করলেও কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। পরে একজন ডিএমএফ এসে দেখার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না, একটি সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এভাবে চিকিৎসকহীন থাকতে পারে!”
ঘটনার পর হাসপাতালে উপস্থিত হন ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনি জানান,
> “ওই রাতে এমবিবিএস চিকিৎসক ডা. কালিপদ সরকারকে দায়িত্বে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিনি না জানিয়ে ব্যক্তিগত কাজে চলে যান এবং তার স্থলে ডিএমএফ পাস রুবেলকে বসিয়ে দেন। এ ঘটনায় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন,
> “চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অর্থের বিনিময়ে চালানোর কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ দায়িত্বরত থেকে অন্য কাউকে টাকার বিনিময়ে দায়িত্ব দিয়ে থাকে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
ঘটনার পর থেকে ডিএমএফ রুবেল পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।স্থানীয়দের অভিযোগ, এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এমবিবিএস চিকিৎসক থাকা বাধ্যতামূলক হলেও, দীর্ঘদিন ধরেই কিছু চিকিৎসক ডিএমএফ পাস করা ছাত্রীদের দিয়ে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে চিকিৎসাসেবার মান যেমন নেমে যাচ্ছে, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।এ ঘটনায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।