নিজস্ব প্রতিবেদক
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে আজ ১৫ জুলাই ২০২৫ তারিখে তিনটি পৃথক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
👉 অভিযান ১: চিকিৎসক নিয়োগে অনিয়ম তদন্তে শিশু হাসপাতালে দুদকের অভিযান
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই চিকিৎসক নিয়োগের অভিযোগে রাজধানীতে অভিযান চালায় দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম।
অভিযানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত ও ২০১১ সালের নিয়োগ বিধি পর্যালোচনা করে জানা যায়—৬ মাসের জন্য এডহক ভিত্তিতে ৬৫ জন আবাসিক মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ নিয়োগপ্রাপ্তই অবৈতনিক চিকিৎসক, এমডি শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের জন্য এখনো নির্ধারিত কোনো স্থায়ী প্রবিধান না থাকায় নিয়মশৃঙ্খলা ব্যাহত হচ্ছে বলেও দুদক টিম অবগত হয়। সংশ্লিষ্ট রেকর্ড সংগ্রহ করে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
👉 অভিযান ২: ঘুষের বিনিময়ে লাইসেন্স ইস্যুর অভিযোগে গাজীপুর বিআরটিএতে অভিযান
বিআরটিএ গাজীপুর অফিসে দালালদের মাধ্যমে ঘুষের বিনিময়ে লাইসেন্স ইস্যু ও পরীক্ষা ছাড়াই উত্তীর্ণ দেখানোর অভিযোগে সমন্বিত জেলা কার্যালয় গাজীপুর থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়।
ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়ে টিম দেখতে পায়, ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও অনেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েও পাশ দেখানো হয়েছে। একাধিক খাতায় একই হাতের লেখা ও তথ্যহীন খাতায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিআরটিএ কর্মকর্তারা ফেল করানো প্রার্থীদের খাতা দেখাতে ব্যর্থ হন। এসব ঘটনায় অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
👉 অভিযান ৩: এতিমদের ক্যাপিটেশন গ্রান্ট আত্মসাতের অভিযোগে মাদারীপুরে অভিযান
মাদারীপুরের হযরত শাহ মাদার (র.) দরগাহ শরীফ এতিমখানায় শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আজ অপর একটি অভিযান চালানো হয়।
২০১৯ সাল থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত এতিমখানাটিতে প্রতি মাসে জনপ্রতি ২,০০০ টাকা করে মোট ২ কোটি ৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও এর মধ্যে ১ কোটি ৫১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে।
প্রতিষ্ঠানটিতে কখনোই ৩০০ জন এতিম ছিল না—সেক্রেটারি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অতিরিক্ত বরাদ্দ উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া অনুদান ও এফডিআরের অর্থ ব্যক্তিগত ব্যবসায়ে ব্যবহারেরও তথ্য মিলেছে।
অভিযানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।