নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ১৫ জুলাই ২০২৫:
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের ৩২ হাজার শূন্য পদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “শুধু অবকাঠামো নয়, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতেই হবে। এ জন্য নেতৃত্বের ঘাটতি পূরণ জরুরি।”
যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্যাটাগরি করে নিয়োগের নির্দেশ
বৈঠকে তিনি স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যদের প্রাধান্য দিতে বলেন। তিনি নির্দেশ দেন, “যারা বহু বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, তাদের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবে তরুণ ও মেধাবীদেরও সুযোগ দিতে হবে। কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সুষ্ঠু নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।”
শিগগিরই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, বদলিতে নীতিমালা পরিবর্তনের আভাস
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষক বদলির প্রক্রিয়ায়ও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “বর্তমানে অনেক শিক্ষক তদবির করে শহরের স্কুলে বদলি হন। এ ধারা বন্ধে একটি স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।”
নারীবান্ধব অবকাঠামো ও প্রযুক্তি সংযুক্তির তাগিদ
স্কুলগুলো নারীবান্ধব হচ্ছে কি না, সে বিষয়েও জানতে চান প্রফেসর ইউনূস। তিনি বলেন, “স্কুল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনায় অন্তত একজন নারী স্থপতিকে রাখতে হবে, যাতে মেয়েদের প্রয়োজন বিবেচনায় আনা যায়।”
তিনি আরও বলেন, দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালুর উদ্যোগ নিতে হবে।
মূল্যায়নে ভালো ফল যেসব স্কুলে, সেখানে নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ
উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় বৈঠকে বলেন, “অবকাঠামো উন্নয়নে প্রচুর ব্যয় হলেও কাঙ্ক্ষিত মানের শিক্ষা নিশ্চিত হয়নি। যেসব স্কুল ভালো করছে, সেখানে প্রধান শিক্ষক ও সহকর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও পেশাদারিত্ব মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় দ্রুত পদায়ন ও নিয়োগ জরুরি।”