নিজস্ব প্রতিবেদক। ঢাকা, ৯ জুলাই ২০২৫:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট আজ (০৯ জুলাই) তিনটি পৃথক অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে কর ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং চিকিৎসাসেবায় অনিয়মসহ একাধিক অনৈতিক কার্যক্রমের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
👉 অভিযান ১: কর নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি
কর অঞ্চল-৫ এর সার্কেল-৯০ (কোম্পানি)-তে পরিচালিত অভিযানে দেখা যায়, একটি কোম্পানির ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ করবর্ষে নির্ধারিত করদাবি ছিল যথাক্রমে ৭২,৯৬,০৬,৮৬২/- ও ৭৩,৬১,৩০,৯৯০/-, মোট ১৪৬,৫৭,৪৬,৫৫৩ টাকা। পরবর্তীতে এসব মামলায় করদাবি কমিয়ে ০ ও ১,২৯৯/- টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অভিযানকালে কম কর নির্ধারণকারী কর্মকর্তার আদেশসংক্রান্ত মূল ফাইল খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গায়েব করা হয়েছে বলে এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। কর ফাঁকির এই ঘটনাটি সরকারের বিপুল রাজস্ব ক্ষতির শামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
👉 অভিযান ২: ঘুষের বিনিময়ে কর মওকুফ, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ
এক রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর মওকুফ করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিসাধন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা প্রধান কার্যালয় থেকে আরেকটি অভিযান পরিচালিত হয়।
মোহাম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ও ভূমি অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট জমির দলিল ও নথিপত্র সংগ্রহ করে এলাকা পরিদর্শন করে টিম। প্রাপ্ত রেকর্ড বিশ্লেষণ করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
👉 অভিযান ৩: পটুয়াখালীতে চিকিৎসাসেবায় অনিয়ম
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচালিত অভিযানে ছদ্মবেশে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসক উপস্থিতি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ওষুধ বিতরণ এবং রোগীদের খাবারের মান সরেজমিনে পরিদর্শন করে এনফোর্সমেন্ট টিম।
রোগীদের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও হয়রানির একাধিক অভিযোগের সত্যতা মেলে। এছাড়া ওষুধ বিতরণ রেজিস্ট্রার, স্টক রেজিস্টারসহ রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অনিয়মের প্রমাণ মেলে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি অভিযানের তথ্য বিশ্লেষণ করে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে এবং প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।