শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে–বাবুল মোল্লা


মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমাঃ রাজনীতি হওয়া উচিত জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে । শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে যিনি নিজেকে দলীয় ও সামাজিক কল্যাণে সম্পূর্ণরূপে বিলিয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষের জন্য।
এলাকাবাসীর কল্যাণে রয়েছে তার অসামান্য ভূমিকা । তিনি হলেন, মাদারীপুর জেলার সদর থানার ছিলারচর ইউনিয়ন বিএনপির একাধারে ১৮ বছরের সভাপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট সমাজ সেবক, ছাত্র জীবন থেকে বর্তমান পর্যন্ত শহিদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী ও আদর্শিক রাজনীতির চর্চা করেন, ছিলারচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়ত হাজী আব্দুল মালেক মোল্লা সাহেবের সুযোগ্য সন্তান মোঃ বাবুল মোল্লা । প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপকালে বিএনপির এ নেতা বলেন, বিগত দিনে ছিলারচর ইউনিয়নের অসহায় নিপীড়িত মানুষের পক্ষে ছিলাম- আছি ও আজীবন তাদের পাশে থাকতে চাই । রাজনীতির মাধ্যমে পাওয়ার কিছু নাই।
রাজনীতি হলো নীতিমালার একটি স্বতন্ত্র রূপ, যার দ্বারা মানুষের মৌলিক অধিকার মিটিয়ে ফেলতে পারে একজন নেতা । রাজনীতিক ও সামাজিক গুণাবলি সম্পন্ন মানুষই জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেন ।
বিএনপি নেতা বাবুল মোল্লা আরও বলেন, যে কোনো দেশের ইতিহাসে এমন এক সময় আসে যখনকার ঘটনাবলি অন্যান্য ঘটনাকে ম্লান করে দেয় । এমন ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে যিনি জাতির চলার পথে গতি সঞ্চার করেন, নতুন দিক-নির্দেশনা দেন, উদ্বুদ্ধ করেন আত্ম-অনুসন্ধানে । শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তেমনই এক ব্যক্তিত্ব । বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি ।
জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রের প্রাণপুরুষ। আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি। তার ছিল সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি। তিনি ছিলেন ভিশনারি, এক স্বপ্নদ্রষ্টা । তিনিই জাতিকে একটি সত্যিকার গণতন্ত্রের শক্তভিত্তির ওপরে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন । আনতে চেয়েছিলেন অর্থনৈতিক মুক্তি। দিতে চেয়েছিলেন জাতিকে সম্মান আর গৌরব।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে তার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল যা অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ জনগণ যখন চরম ভীতি ও হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিল তেমন এক কঠিন সময়ে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জিয়াউর রহমান ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও আশান্বিত করে তুলেছিলেন। তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ক্ষান্ত হননি। একইসাথে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের নেতৃত্বও দিয়েছেন। অবশেষে দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছিলাম স্বাধীনতা। পেয়েছিলাম স্বাধীন বাংলাদেশ।
শহিদ জিয়ার সবচেয়ে বড় সৃষ্টি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের রাজনীতি, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল “বিএনপি” গঠন করা। তিনি বিশ্বাস করতেন এবং বলতেন, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ’। দেশপ্রেম সবার ঊর্ধ্বে, তার হৃদয়ে সারাক্ষণ বাজত সেই সুর ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ।’ স্বাধীনতা ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে ৩০ মে ১৯৮১ শাহাদত বরণ পর্যন্ত মাত্র ১০ বছর তাঁর কর্মময় জীবনে উৎপাদন, উন্নয়নে যাদুর পরশ লেগে আছে।
জিয়া জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ে একটি বড় রকমের ঝাঁকুনি দিয়ে গেছেন। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, নারী, শিশু সবকিছুতেই একটা বিপ্লব ঘটিয়ে গেছেন। গোটা জাতিকে তিনি ’৭১’র মতো একতাবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। একটি দৃঢ় জাতীয় সংহতি সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। পরিচয়-সংকটে আক্রান্ত হীনম্মন্যতায় ভোগা জাতিকে তার সত্যিকারের পরিচয় এবং তার আপন স্বাধীন স্বকীয়তার পরিচিতি তিনি উন্মোচন করতে পেরেছিলেন। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সংমিশ্রণে হাজার বছরের যে রসায়ন, তারই আবিষ্কার তিনি করেছিলেন। নাম দিয়েছিলেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।
বিএনপি নেতা বাবুল মোল্লা আরও বলেন, বিগত দিনে আওয়ামীলীগ
ক্ষমতায় থেকে অন্যায় ভাবে সব জায়গা থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলেছে। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, জিয়া উদ্যান, জিয়া আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার সার কারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় জিয়া ও খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত পড়েছিলেন । ১৩ নভেম্বর ২০১০ শহিদ জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত ৩৮ বছরের ক্যান্টনমেন্টের মইনুল হোসেন রোডের বাড়ি থেকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বের করে দেয়া হয়েছিল ।
আওয়ামী লীগ জীবিত জিয়ার চেয়ে মৃত জিয়াকে বেশি ভয় পায়। কারণ, জিয়ার কর্ম অম্লান । রাজনৈতিক সকল প্রকার সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্য শহিদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত হতে হবে।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক- সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমান, যিনি এ দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন তলাবিহীন ঝুড়ির পরিবর্তে অপার সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে, যার জাতীয়তাবাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করে চলেছেন তারই সুযোগ্য সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ।

তিনি বলেছেন, যাদের পেশা শুধুমাত্র রাজনীতি করা তারা দেশ ও জনগণের জন্য কাজ কীভাবে করবে! খাই- খাই, চাঁদাবাজির অপরাজনীতি থেকে বিরত থাকতে হলে আগে নিজেকে কর্ম দ্বারা স্বাবলম্বী করে দেশের জনগণের জন্য কাজ করতে হবে । আগামী দিনে ছিলারচর ইউনিয়নকে চাঁদাবাজমুক্ত, মাদকমুক্তসহ সকল প্রকার অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও কঠোরভাবে দমনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন, বিএনপি নেতা বাবুল মোল্লা । সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন তিনি ।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *