নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা:
খুলনার হরিণটানা থানাধীন কৈয়া বাজার এলাকায় ভয়াবহ ও নির্মম বাবলু দত্ত হত্যাকাণ্ডের রহস্য মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উদঘাটন করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি ধারালো চাপাতি, দুটি মোবাইল ফোন এবং একটি মোটরসাইকেল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জুন ২০২৫ তারিখ সকালে বাবলু দত্ত ও তার ছেলে দিপু দত্ত স্থানীয় কৈয়া বাজারের দোকানে যান। সেখান থেকে বাবলু দত্ত রাজমিস্ত্রির কাজে কুলটি এলাকায় চলে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি দোকান থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাত ১১টার দিকে প্রতিবেশী একজন ফোন করে জানান, দেবাশীষ নামের এক ব্যক্তির মেহগনি বাগানের পাশে বাবলু দত্তের মোটরসাইকেল দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলে দিপু দত্ত ও তার মামা সুমন শেখ মোটরসাইকেলটি পেলেও বাবলুর কোনো খোঁজ মেলে না। মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তারা। এক পর্যায়ে মেহগনি বাগানের ২০-২৫ গজ ভিতরে বাবলু দত্তের গলা কাটা রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হরিণটানা থানা পুলিশ ও ফুলতলা থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কৈয়া বাজার ও খুলনার ফুলতলা এলাকা থেকে সুমন শেখ (৪৫) ও মুক্তি মোল্যা (৫৩) নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে। তারা খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার বাসিন্দা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে। তাদের দেখানো মতে রাজবাধ দক্ষিণপাড়ায় একটি খালের পানির মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয় ২টি ধারালো চাপাতি। এছাড়াও তাদের হেফাজত থেকে ২টি মোবাইল ফোন ও ১টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
থানার রেকর্ড পর্যালোচনায় ধৃত সুমন শেখের বিরুদ্ধে পূর্বে ২টি মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কোনো মামলা আছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।