দুদকের তিনটি পৃথক অভিযানে অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের প্রাথমিক প্রমাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:- ঢাকা, ১৯ জুন ২০২৫:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট আজ বৃহস্পতিবার দেশের তিনটি ভিন্ন স্থানে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নেয়। এসব অভিযানে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম এবং অপচয়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযান শেষে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।

অভিযান-১: ঠাকুরগাঁওয়ের আকচা ইউনিয়নে কোটি টাকার দুর্নীতি চিত্র উন্মোচন

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদে একই রাস্তার নামে দুইবার বরাদ্দ উত্তোলন, লাইব্রেরি প্রকল্পে জালিয়াতি ও দোকান ভাড়া বাবদ আদায়কৃত বিশাল অঙ্কের অর্থের কোন হিসাব না রাখার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক, ঠাকুরগাঁও।
পরিদর্শনে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কাবিটা সাধারণ বরাদ্দ থেকে ২.৫৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি রাস্তা পরবর্তীতে এলজিএসপি বরাদ্দে আবার দেখিয়ে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করা হয়।
এছাড়াও, একটি এনজিও নির্মিত লাইব্রেরিকে সরকারি প্রকল্প হিসেবে দেখিয়ে আরও প্রায় ২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এবং পরিষদের পাশের ৪০টি দোকান ভাড়া বাবদ আদায়কৃত ২০ লক্ষ টাকার কোন রেকর্ড না থাকা — এসব তথ্য অভিযানে উঠে আসে।
প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবের ভাষ্য অনুযায়ী, ভাড়ার টাকা পরিষদের তহবিলে জমা হয়নি দীর্ঘ ৫ বছরেও।
এছাড়াও, একাধিক অনিয়ম ও নথি গোপনের প্রমাণ মিলেছে। অভিযানের রেকর্ডপত্র ও সাক্ষ্যাদি যাচাই করে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেবে টিম।

অভিযান-২: বাতিল কারিকুলামে প্রশিক্ষণ দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বাতিল হওয়া কারিকুলামের ভিত্তিতে চলমান প্রশিক্ষণের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম।
অভিযানে দেখা যায়, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ ওই প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দেয়।
তবে, পূর্বে কী পরিমাণ ব্যয় হয়েছে, এবং সরবরাহকৃত উপকরণ ও প্রশিক্ষণ মডিউলের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
টিম অভিযানে সংগৃহীত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

অভিযান-৩: ঝালকাঠির ৪ কিমি রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম তদন্ত

ঝালকাঠির সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীন নলছিটি উপজেলার শিমুলতলা থেকে মাদারঘোনা পর্যন্ত ৪ কিমি রাস্তার সিলকোটের কাজে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালায় দুদক পিরোজপুর জেলা কার্যালয়।
অভিযানে প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে সরেজমিন পরিমাপ এবং যাচাই করা হয় সিলকোট কাজের মান ও পরিমাণ।
সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও প্রকৌশলীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে বিস্তারিত তদন্তপত্র কমিশনে দাখিল করা হবে।

দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব অভিযানে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে, তা বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *