নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ১৮ জুন ২০২৬:
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশ রক্ষা ও নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ অক্ষুণ্ন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমন্বিত অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জোং, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাবৃন্দ, সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
পরিবেশ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ৩টি মূল নির্দেশনা:
১. নদীপ্রবাহের গুরুত্ব:
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না। আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে নদী ও জলপ্রবাহকে।”
২. জনসংখ্যা ও বন্যা ঝুঁকি:
তিনি আরও বলেন, “প্রকল্পের সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসংখ্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বিবেচনায় রাখতে হবে। শুধু সেতু নির্মাণ নয়, সেগুলো বিপদে মানুষের আশ্রয়স্থল হতে পারছে কি না তা ভাবতে হবে।”
৩. আন্তর্জাতিক সংযোগ ও আঞ্চলিক উন্নয়ন:
প্রধান উপদেষ্টা জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে নেপাল, ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সংযোগ তৈরির সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ইনভেস্টমেন্ট হাব গড়ে তুলতে চাই। এজন্য প্রকল্প হতে হবে আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত ও কৌশলগত।”
মাস্টারপ্ল্যান ও পানি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ:
সভায় তিনি একটি পরিবেশসম্মত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং পানি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন, যাতে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় জলবায়ু ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান হাওর অঞ্চলের পূর্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “হাওরে রাস্তা নির্মাণের ফলে ইকোসিস্টেম ধ্বংস হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ভুল যেন না হয়, সেজন্য প্রকল্প নিতে হবে পরিবেশ ভাবনা মাথায় রেখে।”