যমুনা সেতু ও মহাসড়ক ভোগান্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ সারজিস আলমের: উত্তরবঙ্গবাসীর প্রতি রাজনৈতিক সচেতনতার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক:- ঢাকা, ১৪ জুন ২০২৫:উত্তরবঙ্গমুখী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ ও অবকাঠামোগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতা সারজিস আলম। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, শুধু সংকীর্ণ টোল প্লাজার কারণে যমুনা সেতুর পূর্বে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।তিনি লিখেছেন, “শুধুমাত্র সংকীর্ণ টোল প্লাজার কারণে উত্তরবঙ্গের মানুষ যমুনা সেতুর পূর্বে ২০ কিলোমিটারের অধিক রাস্তা জ্যামে আটকে থাকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যায় সেই জ্যামে। তারপরও কারো টনক নড়ে না।”

ঢাকা থেকে রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ এক দশক ধরে চললেও এখনো শেষ হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে অসমাপ্ত রাস্তার কারণে যাত্রীদের দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক এখনো চার লেনে উন্নীত হয়নি বলেও অভিযোগ করেন।রেলপথে সময় নষ্টের কথাও তোলেন সারজিস আলম।

তিনি জানান, বর্তমানে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, ও পঞ্চগড়মুখী ট্রেনগুলো রংপুর-বগুড়া হয়ে না গিয়ে রাজশাহী-নওগাঁ-নাটোর হয়ে ২০০ কিলোমিটার ঘুরে যাত্রা করছে, ফলে ঢাকা থেকে এসব জেলায় পৌঁছাতে ১৫-১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে।তিনি লিখেছেন, “এই ঈদে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যেতে আমার সময় লেগেছে ১৭ ঘণ্টা, আসতে লেগেছে ১৫ ঘণ্টা। কেউ কেউ ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় রাস্তায় ছিলেন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি এখনো এই অবস্থা হয়, তবে ‘উন্নয়নের গল্প’ অত্যন্ত অপ্রাসঙ্গিক।”

টোল আদায় ও ভোগান্তি বন্ধে দাবিও জানান তিনি।সারজিস আলম বলেন, যমুনা সেতুতে বিনিয়োগকৃত অর্থ বহু আগেই উঠে এসেছে টোলের মাধ্যমে। এরপরও টোল প্লাজার জটিলতা থেকে মানুষ মুক্তি পাচ্ছে না। তিনি টোল আদায় বন্ধ করা অথবা টোল বুথের সংখ্যা অন্তত তিনগুণ বাড়ানোর দাবি জানান।

উত্তরবঙ্গের অবহেলার অভিযোগ এনে তিনি লিখেন,

“উত্তরের জনপদগুলো থেকে আওয়ামী লীগ শুধু শোষণ করেছে, দেওয়ার বেলায় ছিল পক্ষপাতদুষ্ট। আগামীতে উত্তরের মানুষ এই বৈষম্য আর মেনে নেবে না।”

ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,

“ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরগুলোর সড়ক এক্সপ্রেসওয়ে বা চার লেনে উন্নীত করতে হবে। আন্তঃবিভাগীয় রেললাইন নির্মাণ করতে হবে যাতে সর্বনিম্ন সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। ট্রেনের পুরনো বগির বদলে আধুনিক বগি সরবরাহ করতে হবে।”

শেষে সারজিস আলম লিখেন,

“উত্তরবঙ্গের গণমানুষ, আপনারা আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো তুলে ধরুন। এই সমস্যার সমাধানই হতে হবে উত্তরবঙ্গকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার। যারা জনগণের জন্য কাজ করবে, তাদেরকেই ভোট দেবেন। যারা করবে না, তারা যে দলেরই হোক না কেন তাদেরকে বর্জন করবেন।”

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *