মানবিক পুলিশ সুপারের সহায়তায় নতুন জীবন পেল কিশোরী সামিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামানের মানবিক সহায়তায় নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে ১২ বছরের কিশোরী সামিয়া। জন্ম থেকেই হৃদপিণ্ডে ছিদ্রসহ জটিল হার্ট সমস্যায় ভুগছিল মেয়েটি। ধীরে ধীরে তার হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছিল এবং শ্বাসকষ্ট, বুকব্যথা, মাথা ঘোরা, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনসহ নানা জটিলতায় প্রায়শই অজ্ঞান হয়ে পড়তো সে।

সামিয়ার বাবা শামীম হোসেন একজন গার্মেন্টস শ্রমিক, মা রীমা আক্তার গৃহিণী। চার ভাইবোনের মধ্যে সামিয়া দ্বিতীয়। অভাবের কারণে তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গণমাধ্যমে ‘অভাবে চিকিৎসা বন্ধ শিশু সামিয়ার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান এবং তার স্ত্রী রিফাত জাহানের।পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে একটুও দেরি করেননি তারা। ঢাকার (উত্তর) ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মো. গোলাম সরোয়ারের মাধ্যমে সামিয়াকে গত ২৩ জুন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন) নেওয়া হয়। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ৮ জুলাই অধ্যাপক ডা. মো. শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম তার ওপেন হার্ট সার্জারি সম্পন্ন করে। সাত ঘণ্টাব্যাপী সফল অস্ত্রোপচারে নতুন জীবন ফিরে পায় সামিয়া।

আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি ফিরছে সামিয়ার পরিবার। এ সময় চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি সামিয়ার বাবা শামীম হোসেন। আবেগে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে তিনি বলেন, “চোখের সামনে মেয়ের মৃত্যুর প্রহর গুনছিলাম। আজ সে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে—এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এসপি স্যার ও তার স্ত্রী নীরবে আমাদের পাশে ছিলেন, সকল খরচ তারাই বহন করেছেন।”

সামিয়াও আবেগে বলেন, “আমিতো মরেই যেতাম। আল্লাহ্‌ তায়ালা তাকে (এসপি স্যার) পাঠিয়েছিলেন আমাকে বাঁচাতে। আমরা সবসময় তার জন্য দোয়া করব।”

সামিয়ার চিকিৎসা তদারকির দায়িত্বে থাকা ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, “এসপি আনিসুজ্জামান স্যার সবসময় আড়ালে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। তাঁর এই মানবিক গুণাবলীর কারণে ফোর্সের সদস্যরা তাকে ভীষণ শ্রদ্ধা করেন।”

এসপি মো. আনিসুজ্জামান বর্তমানে ঢাকা জেলা পুলিশের দায়িত্বে রয়েছেন। তার এই মানবিক উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *