“তিস্তার গতি-প্রকৃতি উজানের ওপর নির্ভরশীল” — সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেছেন, “তিস্তা নদীর গতি ও প্রকৃতি অনেকটাই বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে নেই, এটি উজানের দেশের ওপর নির্ভরশীল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার চূড়ান্ত নকশা প্রস্তুতে সময় লাগবে অক্টোবর পর্যন্ত। এরপর চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।”

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা খিতাখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন তিস্তার বাম তীরে পূর্ব সতর্কীকরণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

রেজওয়ানা হাসান বলেন, “সরকার ২০১১ সাল থেকেই তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এখনও চুক্তি স্বাক্ষরিত না হলেও এ নিয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিস্তা যেহেতু আমাদের নদী, ভাটির দেশের জনগণ হিসেবে এ নদীর ওপর আমাদেরও অধিকার রয়েছে। এই অধিকার রক্ষায় এবং জনপদ ও জনগণের স্বার্থে নদীটিকে টিকিয়ে রাখাই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।”

তিনি জানান, ২০১৬ সালে চীন সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়, যার ভিত্তিতে চীন একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিল। তবে সেটি বাস্তব রূপ পায়নি। পরবর্তীতে জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিস্তা নিয়ে একটি ‘মহাপরিকল্পনা’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার।

রেজওয়ানা হাসান বলেন, “এই মহাপরিকল্পনা যেন কেবল সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত না হয়ে জনগণের মতামতের প্রতিফলন হয়, সেজন্য তিস্তা তীরবর্তী পাঁচটি স্থানে গণশুনানি আয়োজন করা হয়। এসব শুনানিতে ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল এবং জনগণ তাদের মতামত দিয়েছেন। সেই মতামত অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত পরিকল্পনা সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, অক্টোবর মাসের মধ্যে পরিকল্পনার নকশা চূড়ান্ত করা সম্ভব হলে এরপর প্রকল্পের মোট ব্যয় ও বাস্তবায়ন সময়সীমা নির্ধারণ করে চীন সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি শুরু হবে। “আশা করছি, এরপর একটি চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব হবে।”

এসময় সাংবাদিকদের রাজনৈতিক প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি যে বিষয়ে এখানে এসেছি, সে বিষয়েই কথা বলবো।”

পরিদর্শনকালে সৈয়দা রেজওয়ানা হাসানের সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোছা. নুসরাত সুলতানা, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুড়িগ্রাম শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

পরে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন এবং নদীভাঙন রোধ ও পরিকল্পনার অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করেন।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *