নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে কবিরাজ সেজে প্রতারণার মাধ্যমে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাতকারী একজন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। অভিযানে তার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভুক্তভোগী গৃহবধূর প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় ছয় মাস আগে, যখন এক মধ্যবয়সী বিধবা নারীর বাড়িতে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেকে কবিরাজ পরিচয়ে হাজির হন। তিনি দাবি করেন, তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেন এবং যে কোনো সম্পদ দ্বিগুণ করে দিতে পারেন। বিশ্বাস স্থাপনের জন্য কবিরাজ সামনেই একটি কৌশলে নোট দ্বিগুণ করে দেখান। এতে ভুক্তভোগী তার প্রতি আস্থা স্থাপন করেন।
এরপর কবিরাজ একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে চলে যান। গত ২৪ জুন দুপুরে, ভুক্তভোগীর ছোট বোন বেড়াতে আসলে কবিরাজ আবারও হাজির হয়। একই প্রলোভনে তিনি দুই বোনকে ঘরে থাকা সকল নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার দিতে বলেন, যেগুলো ডাবল করে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তার কথামতো ভুক্তভোগী ৪,২৫,০০০ টাকা ও আনুমানিক তিন ভরি স্বর্ণালংকার তুলে দেন কবিরাজের হাতে। কবিরাজ সেগুলো একটি কার্টুনে ভরে রেখে বলেন, দুই ঘণ্টা পর সেটি খুলতে হবে। এরপর সুযোগ বুঝে সুকৌশলে পালিয়ে যায় প্রতারক।
দুই ঘণ্টা পর মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে নম্বর বন্ধ পেয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। কার্টুন খুলে দেখা যায়, ভিতরে শুধু কিছু কাগজপত্র রেখে প্রতারক সব নিয়ে পালিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী দ্রুত ঘটনাটি জেলা পুলিশের নজরে আনলে, পুলিশ সুপার গোয়েন্দা শাখাকে তদন্ত ও আসামি গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
ডিবি অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে এসআই (নিঃ) শিবু মন্ডলের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম অভিযান চালিয়ে ২ জুলাই রাত ২টা ৫০ মিনিটে যশোর জেলার অভয়নগর থানার ধোপাদী গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে প্রতারক মো. ইসমাইল গাজী (৪৮)-কে গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের আনছার আলী গাজীর ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইসমাইল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় ৩,৪০,৫০০ টাকা ও ভুক্তভোগীর বিভিন্ন স্বর্ণালংকার।
এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পর গ্রেফতারকৃত আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছে ডিবি পুলিশ।