মঠবাড়িয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫, গুরুতর ৪ জন বরিশাল মেডিকেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় বিএনপির সদস্য নবায়ন ও যাচাই-বাছাইকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন—ধানীসাফা ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি মো. সজিব হাওলাদার, আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের কর্মী মো. ছগির হোসেন (৪৫), সাবেক পৌর ছাত্রদল নেতা ইসতিহাক আহম্মেদ মিশাত, গুলিসাখালী ইউনিয়নের কর্মী মো. সোহাগ তালুকদার (৪০) এবং টিকিকাটা ইউনিয়নের কর্মী মো. ইউসুফ খান।
উল্লেখ্য, ছগির হোসেন ও ইউসুফ খানের বিরুদ্ধে অতীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় মঠবাড়িয়া পৌর শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও যাচাই-বাছাই চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে অতীতে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন ব্যক্তিদের সদস্য ফরম পূরণ করানোর অভিযোগ ওঠে বহিষ্কৃত নেতা রুহুল আমিন দুলাল ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে।

অনিয়মের অভিযোগ তুললে রুহুল আমিন দুলালের ছোট ভাই মনিরুজ্জামান ছোট্টোর সঙ্গে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম মিয়া মৃধার ভাগ্নে মিশাতের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

জানা যায়, রুহুল আমিন দুলালকে গত ৫ আগস্ট বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে বহিষ্কারের পরও তিনি ও পৌর আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সংগঠনের উপর প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন।

উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপুর ভূমিকা নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। স্থানীয় কর্মীরা অভিযোগ করেন, তিনি দলীয় ঐক্য রক্ষার পরিবর্তে একপক্ষের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন।

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “কিছু সদস্য ফরম নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়। একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। আমি নিজে গিয়ে মিশাতকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করি। না গেলে হয়তো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।”

অপরদিকে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম মিয়া মৃধা বলেন, “উপজেলা ও পৌর বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে একটি গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের দোসরদের বিএনপিতে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তাদের কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করায় মিশাত ও অন্যান্য নেতাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।”

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনও কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।”

এ ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ কর্মীরা।

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *